
যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে তিনজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্ত করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে ওমিক্রন শনাক্তের এটাই প্রথম ঘটনা। এ নিয়ে দেশে মোট ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ৩৩ জন।
বুধবার যবিপ্রবির জিনোম সেন্টারে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক জিনোম সিকোয়েন্সের মাধ্যমে করোনার নতুন এ ধরনটি শনাক্ত করে। যবিপ্রবির জিনোম সেন্টার থেকে জানানো হয়, ভারতীয় দুই নাগরিকের মধ্যে একজন পুরুষ, যার বয়স ৩০ বছর এবং নারীর বয়স ৪১ বছর। তাদের মধ্যে করোনার তেমন কোনো উপসর্গ নেই। বাংলাদেশি নাগরিক একজন পুরুষ এবং তার বয়স ২৫ বছর। যিনি স্থানীয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন বলে গবেষক দলটি ধারণা করছে। তার তিন দিন ধরে ঠান্ডা, গলা ব্যাথা ছাড়া অন্য কোনো উপসর্গ নেই। তবে করোনা ভাইরাসের নতুন এ ধরনটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি করোনার ডেল্টা ধরনের চেয়ে প্রায় চারগুণ শক্তিশালী। মহামারিতে নতুন করে উদ্বেগ ছড়ানো অতি সংক্রামক ধরন ওমিক্রনে এর আগে দেশে আক্রান্ত ৩০ জনই ছিলেন ঢাকার বাসিন্দা।
গবেষক দলটি জানিয়েছে, ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের নতুন এ ধরনের স্পাইক প্রোটিনে ৩০টিরও বেশি মিউটেশন বিদ্যমান। ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া তিনজনের তথ্য গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটার (জিআইএসএআইডি) ডাটাবেজে জমাও দেওয়া হয়েছে।
তথ্যটি জিআইএসএআইডির ওয়েবসাইটেও প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ১০ ডিসেম্বর দেশে প্রথম ওমিক্রন শনাক্ত হয়। দেশে প্রথম ওমিক্রনে সংক্রমিত হন জিম্বাবুয়েফেরত বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের দুই সদস্য। তারা ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
করোনার নতুন এ ধরনটি শনাক্তের বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ওমিক্রন খুবই দ্রুত সংক্রমনশীল। এ জন্য টিকা গ্রহণ, মাস্ক ব্যবহারসহ কঠোরভাবে করোনাকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
তিনি জানান, করোনা ভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন শনাক্তের কাজটি জিনোম সেন্টারে অব্যাহত থাকবে।
যবিপ্রবির অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ও জিনোম সেন্টারের সহযোগী পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বে করোনার নতুন এ ধরন শনাক্তে গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন, বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান ড. হাসান মো. আল-ইমরান, অণুজীববিজ্ঞন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শোভন লাল সরকার, এ এস এম রুবাইয়াতুল আলম, প্রভাষক শামিনুর রহমান, জিনোম সেন্টারের গবেষণা সহকারী প্রশান্ত কুমার দাস, আলী আহসান সেতু ও তৌকির আহম্মেদ প্রমুখ।