মালয়েশিয়া সরকার মিয়ানমারের ১০৮৬ জন নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে। আদালতের আদেশ অমান্য ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর আবেদন অগ্রাহ্য করেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। মিয়ানমার নৌবাহিনীর তিনটি জাহাজে করে মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাতে তাদের ফেরত পাঠানো হয়। জাহাজে তোলার আগে ট্রাক ও বাসে করে তাদের বন্দরে নিয়ে আসা হয়।

এর আগে মিয়ানমারের এই নাগরিকদের তাদের দেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্তে সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কুয়ালালামপুর হাইকোর্ট। দেশটির নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত স্থগিত করতে যে বিচারিক পর্যালোচনার আবেদন করা হয়েছিল বুধবার সকালে আদালতে তার শুনানির কথা ছিল। তার আগেই সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়।

কর্তৃপক্ষ আগে জানিয়েছিল, ১২০০ বন্দিকে ফেরত পাঠানো হবে। কিন্তু পরে তাদের সংখ্যা কেন কমলো তা পরিষ্কার হয়নি।   

অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, ফেরত পাঠানো লোকজনের মধ্যে কিছু সংখ্যালঘু নৃগোষ্ঠীর লোকজনও রয়েছেন যারা মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

এখন মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা নিয়েছে, এ সময় তাদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়ায় তারা আরও বড় ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তারা। কিন্তু যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা শরণার্থী না, তারা অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করেছে বলে মালয়েশিয়ার জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়ার ডিরেক্টর জেনারেল অব ইমিগ্রেশন খাইরুল দিজাইমি দাউদ বলেছেন, “যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তারা সবাই ফেরত যেতে স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছেন, কাউকে কেউ জোর করে পাঠায়নি। যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে কোনো রোহিঙ্গা উদ্বাস্তু অথবা শরণার্থী নেই।”

এর আগে এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়া জানিয়েছিল, জাতিসংঘ হাই কমিশনার ফর রিফিউজিস (ইউএনএইচসিআর) এ যারা নাম লিপিবদ্ধ করেছেন তাদের কাউকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না।

কিন্তু প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, মালয়েশিয়ার অভিবাসী আটক কেন্দ্রগুলোতে ইউএনএইচসিআরের প্রবেশ এক বছরেরও আগে থেকে বন্ধ করে রেখেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এর অর্থ দাউদের বিবৃতি সত্য কিনা তা জাতিসংঘের পক্ষে নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে ইউএনএইচসিআরে নাম লিপিবদ্ধ করা অন্তত ছয় জন আছে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।

অধিকার আন্দোলনকারী গোষ্ঠীগুলো জানিয়েছে, যাদের ফেরত পাঠানো হয়েছে তাদের মধ্যে নিপীড়ন এড়ানোর জন্য পালিয়ে এসে আশ্রয় প্রার্থনা করা সংখ্যালঘু চিন ও কাচিন জনগোষ্ঠীর লোকজনও রয়েছেন।