কুষ্টিয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙার মামলায় গ্রেফতার চার আসামির ৯ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (০৮ ডিসেম্বর) কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিমের আদালত এ আদেশ দেন।
রিমান্ডপ্রাপ্ত ৪ জন হলেন- কুষ্টিয়া শহরের জগতি পশ্চিমপাড়া এলাকার ইবনি মাসউদ (রা.) মাদরাসার শিক্ষক ও জেলার মিরপুর উপজেলার ধুবইল গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহমানের ছেলে মো. আল-আমিন (২৭), শিক্ষক ও পাবনার আমিনপুর থানার দিয়াড় বামুন্দি এলাকার আজিজুল মণ্ডলের ছেলে মো. ইউসুফ আলী (২৬) এবং একই মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র ও কুষ্টিয়ার মিপুর উপজেলার মিংপুর গ্রামের সমসের মৃধার ছেলে মো. আবু বক্কর ওরফে মিঠন (১৯) ও জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর (গোলাবাড়িয়া) এলাকর মো. সামছুল আলমের ছেলে মো. সবুজ ইসলাম ওরফে নাহিদ (২০)।
গত ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচরাস্তার মোড়ে বঙ্গবন্ধুর নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ঘটনার রাতে আবু বক্কর ও নাহিদ একসঙ্গে মাদরাসা থেকে হেঁটে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে পাঁচরাস্তার মোড়ে যান। ভাস্কর্য নির্মাণে ব্যবহৃত বাঁশের মই বেয়ে দুজন উপরে উঠেন। এরপর নাহিদ পিঠে থাকা ব্যাগ থেকে হাতুড়ি বের করেন। দুজন মিলে তখন ভাস্কর্য ভাঙচুর করে। ৮ মিনিট ধরে ভাঙচুরের পর তারা আবার হেঁটে মাদরাসায় ফিরে আসে। শনিবার সকালে তারা বিষয়টি মাদরাসার শিক্ষক আল-আমিন ও ইউসুফকে জানান। শিক্ষকদ্বয় দুই ছাত্রকে পালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
গত ৬ ডিসেম্বর কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) তানভীরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মাওলানা মামুনুল হক ও সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের বক্তব্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে আবু বক্কর ও নাহিদ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙে।
এদিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যের বিরোধিতা ও হুমকিস্বরূপ বক্তব্য দেয়াসহ সংবিধান অবমাননার অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আমির জুনাইদ বাবুনগরী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক এবং ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমির সৈয়দ ফয়জুল করিমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের দুই মামলা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
গতকাল সোমবার (০৭ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদারের আদালত মামলা দুটি গ্রহণ করে পিবিআইকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৭ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
