
চলতি বছরের মে থেকে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীনের মধ্যে চলছে। তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই জুন মাসের ১৫ তারিখে উভয়পক্ষের সংঘর্ষে ২০ ভারতীয় সেনার মৃত্যু হয়। তখন ধারণা করা হয়েছিল, হঠাৎ সৃষ্ট উত্তেজনা থেকেই সেই সংঘর্ষ হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলছে ভিন্ন কথা। ভারত-চীনের জুনের সংঘর্ষ উত্তেজনা থেকে নয়, বরং ভারতীয় সেনাদের ওপর পরিকল্পনা করেই হামলা চালিয়েছিল চীন। এমনকি প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে জেনেও সেই হামলা চালিয়েছিল দেশটি।
ইউনাইটেড স্টেট-চায়না ইকনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশনের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে জমা দেওয়া বার্ষিক রিপোর্টে এই দাবি করা হয়েছে। গালওয়ানে সংঘর্ষের ব্যাপারে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)’র হামলায় নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। আর মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, নিহত চীনা সেনার সংখ্যা ৩৫।
ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের ভারপ্রাপ্ত অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি ডেভিড স্টিলওয়েল অভিযোগ করেছিলেন, “করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চীন সরকার ভারতসহ বিভিন্ন প্রতিবেশী দেশের ওপর চড়াও হওয়ার ছক কষেছিল। লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) তে লালফৌজের আগ্রাসী আচরণ সেই পরিকল্পনারই অংশ।”
যুক্তরাষ্ট্র-চীন অর্থনীতি ও নিরাপত্তা পর্যালোচনা কমিশনের রিপোর্টে গালওয়ান হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওয়েই ফংহর একটি মন্তব্যের প্রসঙ্গ তোলা হয়েছে। যেখানে ওয়েই বলেছিলেন, “যুদ্ধের মাধ্যমেই সীমান্তে স্থিতিশীলতা স্থাপন করা যেতে পারে।”
ওই রিপোর্টে চীনের আগ্রাসী আচরণকেই ১৯৭৫ সালের পরে ফের এলএসিতে রক্ত ঝরার জন্য দায়ী করা হয়েছে। সেখানে ‘প্রমাণ’ হিসেবে গালওয়ান সংঘর্ষের দু’সপ্তাহ আগে চীনের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন সামনে আনা হয়েছে। যেখানে নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল, “যুক্তরাষ্ট্র-চীন সংঘাতে নাক গলালে ভারতকে কঠিন পরিণতি সহ্য করতে হবে।”
রিপোর্টে গালওয়ানে হামলার আগে ওই এলাকায় সশস্ত্র প্রায় এক হাজার চীনা সেনা মোতায়েন এবং পরিকাঠামো নির্মাণের প্রসঙ্গও এসেছে। এ প্রসঙ্গে বিভিন্ন উপগ্রহ চিত্রও তুলে ধরেছে ‘ইউনাইটেড স্টেট-চায়না ইকনমিক অ্যান্ড সিকিউরিটি রিভিউ কমিশন।’