
'পরিবর্তিত জীবনযাত্রায় উদ্ভাবন' স্লোগানে রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আজ শুরু হচ্ছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিভিত্তিক প্রদর্শনী 'বেসিস সফটএক্সপো ২০২০'। দেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড সার্ভিসেস (বেসিস) চার দিনের এ প্রদর্শনীর আয়োজন করছে। আজ বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এ মেলা উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরই সবার জন্য উন্মোচিত হবে মেলা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবটিক্স, আইওটি, বিগডেটাসহ নানা প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও প্রয়োগে দেশের অবস্থান তুলে ধরা হবে এবারের এ আয়োজনে।
তবে কতদূর এগিয়েছে বাংলাদেশ? আইসিটি বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের তথ্যপ্রযুক্তিসেবা রফতানি হয়েছে। দেশের বাজার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার। যার প্রায় ৫০ শতাংশ দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দখলে।
১৫তম বেসিস সফটএক্সপো-২০২০ -এ ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করেছে। মেলায় তথ্যপ্রযুক্তি খাতের শীর্ষস্থানীয় ৩০০টি প্রতিষ্ঠান থাকলেও এক্সপেরিয়েন্স জোনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এককভাবে তাদের প্রদর্শনী করবে।
বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, এ বছরের মধ্যেই যদি আর কয়েকটি হাইটেক পার্ক তৈরি করা যায় তাহলে বিদেশী কোম্পানিসহ অনেক বড় বড় কোম্পানি এদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী হবে। এতে করে রফতানির পরিমাণও অনেক বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন বেসিসের সভাপতি।
মেলার আহ্বায়ক এবং বেসিসের সহসভাপতি (অর্থ) মুশফিকুর রহমান বলেন, মেলায় তিন শতাধিক অংশগ্রহণকারীর মধ্যে ক্রেতা-দর্শনার্থী যেন তার কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠান সহজেই খুঁজে পান, এ জন্য পুরো আয়োজনটিকে ১০টি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের তৈরি সফটওয়্যার ও সংশ্নিষ্ট সেবাভিত্তিক ১২০ প্রতিষ্ঠানকে পাওয়া যাবে সফটওয়্যার শোকেসিং জোনে, তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ও বিজনেস প্রসেসিং আউটসোর্সিং সম্পর্কিত ৪৫টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে আইটিইএস ও বিপিও জোনে, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সামনে রেখে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, মেশিন লার্নিং, বিগ ডাটা এবং আইওটিভিত্তিক সেবা মিলবে ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ জোনের ৩৫ প্রতিষ্ঠানে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটিভিত্তিক পণ্য ও সেবা পাওয়া যাবে এক্সপেরিয়েন্স জোনের ২৫ প্রতিষ্ঠানে। ভ্যাট জোনের ১৫ প্রতিষ্ঠানে জানা যাবে ভ্যাট সফটওয়্যারের বিস্তারিত। ই-কমার্সভিত্তিক ১৮ কোম্পানি অংশ নিচ্ছে ডিজিটাল কমার্স জোনে। উদ্ভাবনী মোবাইল সেবা মিলবে মোবাইল ইনোভেশন জোনের ১২ প্রতিষ্ঠানে। নারী উদ্যোক্তাদের পণ্য ও সেবা নিয়ে উইমেন জোন, ডিজিটাল পেমেন্ট ও ফিন্যান্সিয়াল সেবাভিত্তিক ফিনটেক জোন এবং ডিজিটাল শিক্ষাভিত্তিক ডিজিটাল এডুকেশন জোন থাকছে বেসিস সফটএক্সপোতে। এই তিন জোনে অংশ নিচ্ছে ১০টি করে প্রতিষ্ঠান।
বেসিস জানিয়েছে, ১০টি জোনে বিভক্ত এ প্রদর্শনীতে বিভিন্ন প্রযুক্তিসেবা তুলে ধরার পাশাপাশি ৩০টিরও বেশি প্রযুক্তিবিষয়ক সেমিনার হবে। এসব সেমিনারে দেশ-বিদেশের শতাধিক বিশেষজ্ঞ অংশ নেবেন। থাকছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় আউটসোর্সিং সম্মেলন ও আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প। শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী প্রকল্পগুলোকে সবার কাছে তুলে ধরতে আয়োজন করা হবে ‘ইনোভেটিভ প্রজেক্ট শো-কেসিং’, যেখানে বিজয়ী তিনটি প্রকল্পকে পুরস্কারও দেওয়া হবে। ব্যবসায়ীদের জন্য রয়েছে বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশন।
এ আয়োজনে সুইডেন, জাপান, নেদারল্যান্ডস থেকে আসা ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল দেশি প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেবে। http://bit.ly/BASIS_SoftExpo_2020_App অ্যাপ ডাউনলোড করে দেশের যেকোনো প্রান্তে বসে প্রদর্শনীর লাইভ অনুষ্ঠান দেখার সুযোগ মিলবে।