
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, ভোট ডাকাত-চোরদের, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতিবাজ, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী ও গণতন্ত্রের হত্যাকারীদের দল হচ্ছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন, বিএনপির এই ইতিহাস শুরু জিয়াউর রহমানের অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের মধ্যে দিয়ে এবং তারই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছিলেন এতিমের টাকা আত্মসাৎকারী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়া। আর আজ, সেই দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলছেন, আওয়ামী লীগের সরকার অবৈধ সরকার, ফ্যাসিস্ট সরকার, স্বৈরাচার সরকার।
আমি মির্জা ফখরুলকে বলতে চাই শেখ হাসিনার সরকার যদি অবৈধ সরকার হয়, ফ্যাসিস্ট সরকার হয়, স্বৈরাচারী সরকার হয়, তাহলে জিয়াউর রহমান কি ছিল? জিয়াউর রহমান রাতের অন্ধকারে পিস্তল ঠেকিয়ে ক্ষমতায় গেছেন। মির্জা ফখরুল পাকিস্তানের ইতিহাস পড়েছেন, বাংলাদেশের ইতিহাস পড়েননি বলে মন্তব্য করেন এস এম কামাল হোসেন।
তিনি আরও বলেন, আপনার নেতা জিয়াউর রহমান রাত ১২ টার পরে বঙ্গভবনে ঢুকলেন, বিচারপতি সায়েমের বিছানায় পা রাখলেন, বললেন সাইন ইট। বিচারপতি সায়েম কাগজটা পড়লেন, দেখলেন তার পদত্যাগ পত্র। তিনি জিয়াউর রহমানের দিকে তাকালেন, দেখলেন জিয়াউর রহমান কোমর থেকে পিস্তলটা বের করলেন এবং ৮ থেকে ৯ জন সেনা অফিসার তাকে ঘিরে ধরলেন, জিয়াউর রহমানের এক হাতে স্টিক আর অন্য হাতে পিস্তল। বিচারপতি সায়েম বললেন আমি ভয় পেয়ে পদত্যাগ পত্রে সাইন করলাম। এই রাতের অন্ধকারে পিস্তল ঠেকিয়ে ক্ষমতা দখলকারী জিয়াউর রহমানের কর্মী তো আপনি। জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি, কে তাকে রাষ্ট্রপতি বানিয়েছেন? সংবিধানের কত ধারায় তিনি রাষ্ট্রপতি হয়েছেন? তিনি ছিলেন অবৈধ স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি।
সামরিক আইনের দুটি ধারা ২৯২ ও ২৯৩ ধারার বরাত দিয়ে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, এই ধারা মতে, কোন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা চাকরিরত অবস্থায় নির্বাচন করতে পারে না। জিয়াউর রহমান সেই ধারা ভেঙে নির্বাচন করলেন। পরে যখন সেনাবাহিনীতে কথা উঠলো, তখন ব্যাকডেটে জিয়াউর রহমান এরশাদ সাহেবকে সেনাবাহিনীর প্রধান করলেন। সেই মির্জা ফখরুল গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে বলেন স্বৈরাচার, আরে যার জন্ম অবৈধ বিএনপি তো তাদের দল। ৭১ এর খুনি যুদ্ধাপরাধী, অতি বিপ্লবী আর পরাজিত মুসলিম লীগার, যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করো না, তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে বিএনপি।
মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে আরও বলেন, আপনারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেন, কেউ কিছু বলে না। কিন্তু আপনারা জননেত্রী শেখ হাসিনার শান্তি সমাবশে ১১ টি গ্ৰেনেড নিক্ষেপ করালেন। আল্লাহর রহমতে সেদিন শেখ হাসিনা বেঁচে গেলেও নারী নেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন জীবন দিলেন। ৫০০ বোমায় ৬৩ টি জেলা রক্তাক্ত করলেন, রক্তাক্ত হলো বাংলাদেশ। এইতো হলো মির্জা ফখরুলের গণতান্ত্রিক দল বিএনপি।
বাগাতিপাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের নাটোর জেলা শাখার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৈয়দ আব্দুল আউয়াল শামীম, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি, নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানসহ অনেকে।